আয যারিয়াত

সুরার ভূমিকা
দেখতে ক্লিক করুন

X close

নামকরণ

সূরার প্রথম শব্দ وَالذَّارِيَاتِ আয যারিয়াত থেকে এর নাম গৃহীত হয়েছে। অর্থাৎ এটি সেই সূরা যা الذَّارِيَاتِ (আয যারিয়াত) শব্দ দ্বারা শুরু হয়েছে।

নাযিল হওয়ার সময়-কাল

বিষয়বস্তু ও বর্ণনাভঙ্গী থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, যে সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসলামী আন্দোলনের মোকাবিলা অস্বীকৃতি, ঠাট্রা-বিদ্রুপ ও মিথ্যা অভিযোগ আরোপের মাধ্যমে অত্যন্ত জোরে শোরেই করা হচ্ছিলো ঠিকই কিন্তু তখনো জুলুম ও নিষ্ঠুরতার যাঁতাকালে নিষ্পেষণ শুরু হয়নি, ঠিক সেই যুগে এ সূরাটি নাযিল হয়েছিলো। এ কারণে যে যুগে সূরা ক্বাফ নাযিল হয়েছিলে এটিও সে যুগের নাযিল হওয়া সূরা বলে প্রতীয়মান হয়।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য

এর অধিকাংশটাই জুড়ে আছে আখেরাত সম্পর্কিত আলোচনা এবং শেষভাগে তাওহীদের দাওয়াত পেশ করা হয়েছে। সাথে সাথে মানুষকে এ বিষয়েও হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে যে, নবী-রসূলদের (আ) কথা না মানা এবং নিজেদের জাহেলী ধ্যান-ধারণা আঁকড়ে ধরে একগুঁয়েমী করা সেসব জাতির নিজেদের জন্যই ধ্বংসাত্মক প্রমাণিত হয়েছে যারা এ নীতি অবলম্বন করেছিলো।

এ সূরার ছোট ছোট কিন্তু অত্যন্ত অর্থপূর্ণ আয়াতসমূহে আখেরাত সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে, মানব জীবনের পরিণাম ও পরিণতি সম্পর্কে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ও পরস্পর বিরোধী আকীদা-বিশ্বাস পোষণ করে। এটাই প্রমাণ করে যে, এসব আকীদা-বিশ্বাসের কোনটিই জ্ঞানগত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। প্রত্যেকেই নিজের অনুমান ও ধারণার ভিত্তিতে নিজ নিজ অবস্থানে যে মতবাদ গড়ে নিয়েছে সেটাকেই সে তার আকীদা-বিশ্বাস বানিয়ে আঁকড়ে ধরেছে। কেউ মনে করে নিয়েছে, মৃত্যুর পরে কোন জীবন হবে না। কেউ আখেরাত মানলেও জন্মান্তর বাদের ধারণাসহ মেনেছে। কেউ আখেরাতের জীবন এবং পুরস্কার ও শাস্তির কথা বিশ্বাস করলেও কর্মের প্রতিফল থেকে বাঁচার জন্য নানা রকমের সহায় ও অবলম্বন কল্পনা করে নিয়েছে। যে বিষয়ে ব্যক্তির সিদ্ধান্ত ভুল হলে তার গোটা জীবনকেই ব্যর্থ এবং চিরদিনের জন্য তার ভবিষ্যতকে ধ্বংস করে দেয় এমন একটি বড় ও সর্বাধিক গুরুত্ববহ মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান ছাড়া শুধু অনুমান ও ধারণার ভিত্তিতে কোন আকীদা-বিশ্বাস গড়ে নেয়া একটি সর্বনাশা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। এর অর্থ হলো, মানুষ একটি বড় ভ্রান্তিতে ডুবে থেকে গোটা জীবন জাহেলী ঔদাসীন্যে কাটিয়ে দেবে এবং মৃত্যুর পর হঠাৎ এমন এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে যার জন্য সে আদৌ প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। এরূপ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের একটিই মাত্র পথ আছে, তা হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর নবী আখেরাত সম্পর্কে যে জ্ঞান দান করছেন সে বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ধীর মস্তিষ্কে গভীরভাবে ভেবে দেখবে এবং আসমান ও যমীনের ব্যবস্থাপনা এবং নিজের সত্তা সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে উন্মুক্ত চোখে দেখবে যে, চার পাশে সেই জ্ঞানটির যথাযর্থতার স্বপক্ষে প্রমাণ বিদ্যমান আছে কিনা? এক্ষেত্রে বাতাস ও বৃষ্টির ব্যবস্থাপনা পৃথিবীর গঠনাকৃতি এবং তার সৃষ্টিকূল, মানুষ নিজে, আসমানের সৃষ্টি এবং পৃথিবীর সকল বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করাকে আখেরাতের প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে এবং মানবেতিহাস থেকে উদাহারণ পেশ করে বলা হয়েছে যে, একটা কর্মফল ব্যবস্থা থাকা যে অত্যাবশ্যক এটা এ বিশ্ব-সম্রাজ্যের স্বভাব-প্রকৃতির স্বতস্ফূর্ত দাবী বলেই প্রতীয়মান হয়।

এরপর অতি সংক্ষিপ্তভাবে তাওহীদের দাওয়াত পেশ করে বলা হয়েছে তোমাদের স্রষ্টা তোমাদেরকে অন্যদের বন্দেগী ও দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেননি, বরং নিজের বন্দেগী ও দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি তোমাদের মিথ্যা উপাস্যদের মত নন। তোমাদের মিথ্যা উপাস্যরা তোমাদের থেকে রিযিক গ্রহন করে এবং তোমাদের সাহায্য ছাড়া তাদের প্রভুত্ব অচল। তিনি এমন উপাস্য যিনি সবার রিযিকদাতা। তিনি কারো নিকট থেকে রিযক গ্রহণের মুখাপেক্ষী নন এবং নিজ ক্ষমতাবলেই তাঁর প্রভুত্ব চলছে।

এ প্রসঙ্গে একথাও বলা হয়েছে যে, যখনই নবী-রসূলের বিরোধিতা করা হয়েছে, তা যুক্তির ভিত্তিতে না করে একগুঁয়েমি, হঠকারিতা এবং জাহেলী অহংকারের ভিত্তিতে করা হয়েছে। ঠিক যেমনটি আজ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে। অথচ এর উৎস ও চালিক শক্তি বিদ্রোহাত্মক মনোভাব ছাড়া আর কিছুই নয়। অতপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যেন তিনি এসব বিদ্রোহীদের আদৌ ভ্রুক্ষেপ না করেন এবং নিজের দাওয়াত ও নসীহতের কাজ চালিয়ে যান। কারণ, তা এ লোকদের কোন উপকারে না আসলেও ইমানদারদের জন্য অবশ্যই উপকারে আসবে। কিন্তু যেসব জালেম তাদের বিদ্রোহের ওপর অটল তাদের প্রাপ্য শাস্তি প্রস্তুত হয়ে আছে। কারণ, তাদের পূর্বে এ নীতি ও আচরণ অবলম্বনকারী জালেমরাও তাদের প্রাপ্য আযাব পুরোপুরি লাভ করেছে।

وَمَا خَلَقْتُ ٱلْجِنَّ وَٱلْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴿٥٦ مَآ أُرِيدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍۢ وَمَآ أُرِيدُ أَن يُطْعِمُونِ﴿٥٧ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلْقُوَّةِ ٱلْمَتِينُ﴿٥٨ فَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ ذَنُوبًۭا مِّثْلَ ذَنُوبِ أَصْحَـٰبِهِمْ فَلَا يَسْتَعْجِلُونِ﴿٥٩ فَوَيْلٌۭ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن يَوْمِهِمُ ٱلَّذِى يُوعَدُونَ﴿٦٠
(৫৬) জিন ও মানুষকে আমি শুধু এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার দাসত্ব৫৩ করবে। (৫৭) আমি তাদের কাছে কোন রিযিক চাই না কিংবা তারা আমাকে খাওয়াবে৫৪ তাও চাই না। (৫৮) আল্লাহ নিজেই রিযিকদাতা এবং অত্যন্ত শক্তিধর ও পরাক্রমশালী।৫৫ (৫৯) তাই যারা জুলুম করেছে ৫৬ তাদের প্রাপ্য হিসেবে ঠিক তেমনি আযাব প্রস্তুত আছে যেমনটি এদের মত লোকেরা তাদের অংশ পুরো লাভ করেছে। সেজন্য এসব লোক যেন আমার কাছে তাড়াহুড়ো না করে।৫৭ (৬০) যেদিনের ভয় তাদের দেখানো হচ্ছে পরিণামে সেদিন তাদের জন্য ধ্বংস রয়েছে।
৫৩) অর্থাৎ আমি তাদেরকে অন্য কারো দাসত্বের জন্য নয় আমার নিজের দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছি। তারা আমার দাসত্ব করবে এজন্য যে, আমি তাদের স্রষ্টা। যখন অন্য কেউ এদের সৃষ্টি করেনি তখন তার দাসত্ব করার কি অধিকার এদের আছে? তাছাড়া তাদের জন্য এটা কি করে বৈধ হতে পারে যে, এদের স্রষ্টা আমি অথচ এরা দাসত্ব করবে অন্যদের!

এখানে প্রশ্ন দেখা দেয় যে, আল্লাহ তা’আলা শুধু জিন ও মানুষের স্রষ্টা নন। তিনি সমগ্র বিশ্ব-জাহান ও তার প্রতিটি জিনিসের স্রষ্টা। কিন্তু এখানে কেবল জিন ও মানুষ সম্পর্কে কেন বলা হয়েছে যে, আমি তাদেরকে আমার ছাড়া আর কারো দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করিনি? অথচ গোটা সৃষ্টির প্রতিটি অণু-পরমাণু শুধু আল্লাহর দাসত্বের জন্য। এর জবাব হচ্ছে পৃথিবীতে জিন ও মানুষই শুধু সৃষ্টি যাদের স্বাধীনতা আছে। তারা তাদের ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের গণ্ডির মধ্যে আল্লাহ তা’আলার দাসত্ব করতে চাইলে কিংবা তাঁর দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে চাইলে নেবে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যদের দাসত্ব করতে চাইলেও করতে পারে। জিন ও মানুষ ছাড়া এ পৃথিবীতে আর যত সৃষ্টি আছে তাদের এ ধরনের কোন স্বাধীনতা নেই। তাদের আদৌ কোন ক্ষমতা ও ইখতিয়ার নেই যে, তারা আল্লাহর দাসত্ব করবে না অন্য কারো দাসত্ব করতে পারবে। তাই এখানে শুধু জিন ও মানুষ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা তাদের ক্ষমতা ও ইখতিয়ারের গণ্ডির মধ্যে তাদের নিজ স্রষ্টার আনুগত্য ও দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে এবং স্রষ্টা ছাড়া অন্যদের দাসত্ব করে নিজেরা নিজেদের স্বভাব প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তাদের জানা উচিত যে, তাদেরকে একমাত্র স্রষ্টা ছাড়া আর কারো দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। তাদের জন্য সোজা পথ হচ্ছে যে স্বাধীনতা তাদেরকে দেয়া হয়েছে তার অন্যায় ব্যবহার যেন না করে। বরং স্বাধীনতার এ সীমার মধ্যে নিজ নিজ ইচ্ছা অনুসারে ঠিক তেমনিভাবে যেন আল্লাহর দাসত্ব করে যেভাবে তার দেহের প্রতিটি লোম তার ক্ষমতা ও ইখতিয়ারবিহীন সীমার মধ্যে তাঁর দাসত্ব করছে।

এ আয়াতে ‘ইবাদত’ শব্দটিকে শুধু নামায রোযা এবং এ ধরনের অন্যান্য ইবাদাত অর্থে ব্যবহার করা হয়নি। তাই কেউ এর এ অর্থ গ্রহণ করতে পারে না যে জিন ও মানুষকে শুধু নামায পড়া, রোযা রাখা এবং তাসবীহ তাহলীল করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে। এ অর্থটিও এর মধ্যে শামিল আছে বটে, তবে এটা তার পূর্ণাংগ অর্থ নয়। এর পূর্ণাংগ অর্থ হচ্ছে, জিন ও মানুষকে আল্লাহ ছাড়া অন্যের পূজা আনুগত্য আদেশ পালন ও বিনীত প্রার্থনার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। অন্য কারো সামনে নত হওয়া, অন্য কারো নির্দেশ পালন করা, অন্য কাউকে ভয় করা, অন্য কারো রচিত দ্বীন বা আদর্শের অনুসরণ করা, অন্য কাউকে নিজের ভাগ্যের নিয়ন্তা মনে করা এবং অন্য কোন সত্তার কাছে প্রার্থনার জন্য হাত বাড়ানো তাদের কাজ নয়। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা সাবার ব্যাখ্যা টীকা, ৬৩; আয যুমার, টীকা ২; আল জাসিয়া, টীকা ৩০)।

এ আয়াত থেকে আরো একটি আনুষাঙ্গিক বিষয় সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। তা হচ্ছে জিনেরা মানুষ থেকে স্বতন্ত্র একটি সৃষ্টি। যারা দাবী করে মানবজাতিরই কিছু সংখ্যক লোককে কুরআনে জিন বলা হয়েছে, এর দ্বারা তাদের ধারণার ভ্রান্তি অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে যায়। কুরআন মজীদের নিম্ন বর্ণিত আয়াতসমূহও এ সত্যেরই অনস্বীকার্য প্রমাণ পেশ করে। (আল আন’আম, ১০০, ১২৮; আল আ’রাফ, ৩৮, ১৭৯; হূদ, ১১৯; আল হিজর, ২৭ থেকে ৩৩; বনী ইসরাঈল, ৮৮; আল কাহফ, ৫০; আস সিজদা, ১৩; সাবা, ৪১; সাদ, ৭৫ ও ৭৬; হা-মীম আস সাজদা, ২৫; আল আহক্বাফ, ১৮; আর রহমান, ১৫, ৩৯, ৫৬; (এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, আল আম্বিয়া, টীকা ২১; আন নামল, টীকা ২৩, ৪৫; সূরা সাবার ব্যাখ্য টীকা ২৪)।

৫৪) অর্থাৎ জ্বীন ও মানুষের কাছে আমার কোন উদ্দেশ্য বাঁধা পড়ে নেই যে, এরা আমার দাসত্ব করলে আমার প্রভুত্ব চলবে আর এরা আমার দাসত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে আমি আর আল্লাহ‌ থাকতে পারবো না। আমি তাদের বন্দেগী বা দাসত্বের মুখাপেক্ষী নই। বরং আমার বন্দেগী করা তাদের প্রকৃতির দাবী। এ উদ্দেশ্যেই তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। নিজ প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করা তাদের নিজেদেরই ক্ষতি।

“আমি তাদের কাছে রিযিক চাই না, কিংবা তারা আমাকে খাবার দান করুক তাও চাই না” একথাটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত আছে। আল্লাহ‌ বিমুখ লোকেরা পৃথিবীতে যাদের বন্দেগী করছে তারা সবাই প্রকৃতপক্ষে এসব বান্দার মুখাপেক্ষী। এরা যদি তার প্রভুত্ব না চালায় তাহলে তা একদিনও চলবে না। সে এদের রিযিক দাতা নয় এরাই বরং তাকে রিযিক পৌঁছিয়ে থাকে। সে এদের খাওয়ায় না, এরাই তাকে খাইয়ে থাকে। সে এদের প্রাণের রক্ষক নয়, বরং এরাই তাদের প্রাণ রক্ষা করে থাকে। এরাই তাদের সৈন্য সামন্ত। এদের ওপর নির্ভর করেই তাদের প্রভুত্ব চলে। যেখানেই কেউ এ মিথ্যা প্রভুদের সহযোগী বান্দা হয়নি কিংবা বান্দারা তাদেরকে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থেকেছে সেখানেই তাদের সব জৌলুস হারিয়ে গিয়েছে এবং দুনিয়ার মানুষ তাদের পতন দেখতে পেয়েছে। সমস্ত উপাস্যের মধ্যে একমাত্র মহান ও মহাপরাক্রমশালী আল্লাহই এমন উপাস্য, নিজের ক্ষমতায়ই যাঁর প্রভুত্ব চলছে। যিনি তাঁর বান্দাদের নিকট থেকে কিছু নেন না, বরং তিনিই তাদের সবকিছু দেন।

৫৫) মূল আয়াতে مَتِينُ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার অর্থ দৃঢ় ও অটল যা কেউ নড়াতে পারে না।
৫৬) এখানে জুলুম অর্থ বাস্তব ও সত্যের প্রতি জুলুম করা এবং নিজে নিজের প্রকৃতির প্রতি জুলুম করা। পূর্বাপর প্রসঙ্গ থেকে একথা প্রকাশ পাচ্ছে যে, এখানে জুলুম-নির্যাতনকারী বলতে সেসব মানুষকে বুঝানো হয়েছে যারা বিশ্ব-জাহানের রবকে বাদ দিয়ে অন্যদের দাসত্ব করছে, যারা আখেরাত অস্বীকার করছে, পৃথিবীতে নিজেদেরকে দায়িত্ব মুক্ত মনে করছে এবং সেসব নবী-রসূলদের অস্বীকার করছে যারা তাদেরকে প্রকৃত সত্য সম্পর্কে সতর্ক করার চেষ্টা করেছেন।
৫৭) কাফেররা দাবী করে বলতো যে, সে প্রতিফল দিবস আসার পথে কোথায় আটকে গেল, তা এসে পড়ছে না কেন? এটা কাফেরদের সে দাবিরই জবাব।